দৈর্ঘ্যের ছোটো একক (small units of length) :
(i) ফার্মি বা ফেমটোমিটার [Femtometer] (fm) : 10-18 কিলোমিটার বা 10-15 মিটার বা 10-13 সেন্টিমিটার দূরত্বকে 1 ফার্মি বলে ।
পরমাণুর নিউক্লিয়াস বা নিউক্লিয়নের ব্যাসার্ধ বা ব্যাস প্রকাশে এই একক ব্যবহৃত হয় ।
(ii) x –একক [x unit] (xu) : 10-13 মিটার বা 10-11 সেন্টিমিটার দূরত্বকে 1 x –একক বলে ।
পরমাণুর নিউক্লিয়াসের ব্যাসার্ধ বা ব্যাস এবং অতি ক্ষুদ্র তরঙ্গ দৈর্ঘ্য প্রকাশে এই একক ব্যবহৃত হয় ।
(iii) পিকোমিটার [Picometer] (pm) : 10-12 মিটার বা 10-10 সেন্টিমিটার বা 10-15 কিলোমিটার দূরত্বকে 1 পিকোমিটার বলে । পরমাণু বা তার নিউক্লিয়াসের ব্যাস প্রকাশে এই একক ব্যবহৃত হয় ।
(iv) অ্যাংস্ট্রম [Angstrom] (Å ) : 10-13 কিলোমিটার বা 10-10 মিটার বা 10-8 সেন্টিমিটার দূরত্বকে 1 অ্যাংস্ট্রম বলে । সাধারণ আলো বা x-রশ্মির তরঙ্গদৈর্ঘ্য প্রকাশে এই একক ব্যবহৃত হয় ।
(v) ন্যানোমিটার [Nanometer](nm) : 10-12 কিলোমিটার বা 10-9 মিটার বা 10-7 সেন্টিমিটার দূরত্বকে 1 ন্যানোমিটার বলে । সাধারণ আলোর তরঙ্গদৈর্ঘ্য বা ইলেকট্রনিক যন্ত্রপাতির আকার প্রকাশে এই একক ব্যবহার করা হয় ।
(vi) মাইক্রোমিটার বা মাইক্রন [Micrometer or Micron] (µ) : 10-9 কিলোমিটার বা 10-6 মিটার বা 10-4 সেন্টিমিটার দূরত্বকে 1 মাইক্রন বলে । অনুবীক্ষণ যন্ত্রে যেসব বস্তু দেখা যায়, তাদের আকার প্রকাশে এই একক ব্যবহার করা হয় । বাজারে যেসব পলিথিন ব্যাগ ব্যবহৃত হয় তাদের বেধও মাইক্রনে উল্লেখ করা হয় ।
(vii) এটোমিটার [attometer] (am) = 10-21 কিলোমিটার বা 10-18 মিটার বা 10-16 সেন্টিমিটার দূরত্বকে 1 এটোমিটার বলে । এই ক্ষুদ্র দৈর্ঘ্যের এককও বিশেষ ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হয় ।
দৈর্ঘ্যের বড়ো একক (Big units of length ) :
(i) অ্যাস্ট্রনমিক্যাল একক [Astronomical Unit](AU) : পৃথিবী ও সূর্যের মধ্যে গড় দূরত্বকে 1 অ্যাস্ট্রনমিক্যাল একক বলে ।
1 AU = 1.496 x 108 km বা 1 AU = 1.496 x 1011m বা 1 AU = 1.496 x 1013cm । পৃথিবী থেকে বিভিন্ন গ্রহ, উপগ্রহ ইত্যাদির দূরত্ব প্রকাশে এই একক ব্যবহৃত হয় ।
(ii) আলোকবর্ষ [Light Year ]: শূন্য মাধ্যমে সেকেন্ডে 3 x 108 মিটার বেগে 1 বছর সময়ে আলো যে দূরত্ব অতিক্রম করে তাকে 1 আলোকবর্ষ বলে ।
1 আলোকবর্ষ = 9.467 x 1012 km বা 9.467 x 1015 m বা 9.467 x 1017 cm । বিভিন্ন নক্ষত্রের মধ্যে পারস্পরিক দূরত্ব প্রকাশে এই একক ব্যবহৃত হয় ।
(iii) পারসেক [Parsec]: এটি দৈর্ঘ্যের সবচেয়ে বড়ো একক । জ্যোতির্বিদ্যায় বিভিন্ন দূরবর্তী নক্ষত্রের পারস্পরিক দূরত্ব বা দুটি নক্ষত্রপুঞ্জের পারস্পরিক দূরত্ব প্রকাশে এই একই একক ব্যবহৃত হয় । 1 অ্যাস্ট্রনমিক্যাল একক দৈর্ঘ্যের বৃত্তচাপ বৃত্তের কেন্দ্রে 1 সেকেন্ড কোণ উৎপন্ন করলে ওই বৃত্তের ব্যাসার্ধকে 1 পারসেক বলা হয় ।
1 পারসেক = 3.084 x 1013 km বা 3.084 x 1016 m বা 3.084 x 1018 cm ।
এছাড়াও বিশেষ বিশেষ ক্ষেত্রে ডেকামিটার [decameter] (dam) = 10 m, হেক্টোমিটার [hectometer] (hm) = 102 m, কিলোমিটার [kilometer] (km) = 103 m, মেগামিটার [megameter] (Mm) = 106m, গিগামিটার [gigameter] (Gm) = 109m , টেরামিটার [terameter] (Tm) = 1012m , পেটামিটার [petameter] (Pm) =1015m , এক্সামিটার [exameter] (Em) = 1018m –দৈর্ঘ্যের এই বড়ো একক গুলিও ব্যবহার করা হয় । নক্ষত্রের ব্যাস বা নক্ষত্র পুঞ্জের বিস্তৃতি ইত্যাদি প্রকাশে এই সকল বড়ো এককের ব্যবহার আছে ।
ভরের ছোটো একক (small units of Mass ) :
পারমাণবিক ভর একক [atomic mass unit] (amu/u) : মৌলের একটি পরমাণুর প্রকৃত ভরকে যে এককে প্রকাশ করা হয় সেটিই পারমাণবিক ভর একক । কার্বন (6C12) পরমাণুর ভরের অংশকে এক পারমাণবিক ভর একক বলা হয় ।
6.022 x 1023 সংখ্যক কার্বন পরমাণু ভর = 12 g
অথএব একটি কার্বন পরমাণুর ভর =
অথএব 1 u =
কোনো মৌলের পারমাণবিক ভরকে 1u দিয়ে গুণ করলে মৌলটির একটি পরমাণুর প্রকৃত ভর পাওয়া যায় ।
যেমন, নাইট্রোজেনের পারমাণবিক গুরুত্ব 14 । অতএব নাইট্রোজেনের একটি পরমাণুর প্রকৃত ভর =14 x 1.6605 x 10-24 = 23.247 x 10-24 g
সময়ের ছোটো ও বড়ো একক (small and big units of time ) :
সময়ের ছোটো একক হিসাবে আমরা মিলিসেকেন্ড (ms) এবং মাইক্রোসেকেন্ড (µs) ব্যবহার করে থাকি ।
1 ms = 10-3 s, 1µs = 10-6 s
আবার সময়ের বড়ো একক হিসেবে আমরা ঘন্টা, দিন, সপ্তাহ, মাস, বছর ইত্যাদি ব্যবহার করি ।
আমাদের বয়স আমরা সেকেন্ডে প্রকাশ না করে বছরে প্রকাশ করি —কারণ বয়স সেকেন্ডে প্রকাশ করলে দুটি অসুবিধা হয় । প্রথমত, বয়স সূচক সংখ্যা অত্যন্ত বৃহৎ হয় যা আমাদের সহজে বুঝতে বা প্রকাশ করতে অসুবিধা হয় । দ্বিতীয়ত, বয়স সেকেন্ডে প্রকাশ করলে প্রতি সেকেন্ডে বয়সের মান বাড়তে থাকে এবং সেক্ষেত্রে বয়সের হিসেব রাখা খুবই কষ্টকর হয় । যেমন ধরা যাক কারও বয়স 14 বছর । একে সেকেন্ডে প্রকাশ করলে হবে = 14 x 86400 s = 441504000 s । সেজন্য বয়সকে বছরে প্রকাশ করলে এই দুটি অসুবিধাই দূর করা যায় ।
****
No comments:
Post a Comment